(১)প্রশিক্ষণ:
(১-ক) গ্রাম ভিত্তিক মৌলিক প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ ও মহিলা) :
এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের সদস্য-সদস্যাগণ ভিডিপি সংগঠন সম্পর্কে ধারনা লাভ করেন এবং ভিডিপি প্লাটুনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হন।
(১-খ) নিয়মাবলীঃ
- সংশ্লিষ্ট গ্রামের ৩২জন পুরুষ এবং ৩২ জন মহিলার সমন্বয়ে গঠিত দু’টি প্লাটুন কে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
- গ্রামের সুবিধা জনক স্থানে ১০(দশ) দিনের এই প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়।
- একটি গ্রামে একবার এই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
- প্রশিক্ষণার্থীকে সর্বনিন্ম অষ্টম শ্রেণী পাশ হতে হয়।
- প্রশিক্ষণার্থীর বয়স সর্বনিন্ম ১৮এবং সর্বোচ্চ ৩০বছর।
- প্রশিক্ষণ ভাতা হিসাবে দৈনিক নির্ধারিত হারে প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়।
- প্রশিক্ষনার্থীকে প্রশিক্ষণ শেষে সনদ পত্র প্রদান করা হয়।
- এক গ্রামের সদস্যকে অন্য গ্রামে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না।
- এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামের ভিডিপি পুরুষ ও মহিলা প্লাটুন সমূহ পুনর্গঠিত হয়।
(২) সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণ (পুরুষ ও মহিলা):
এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে সদস্য ও সদস্যাগণ সাধারণ আনসার হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন এবং সাধারণ আনসার হিসেবে অঙ্গীভূত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন।
(২-ক) সাধারণ আনসার প্রশিক্ষণের নিয়মাবলী নিন্মরূপঃ
- জেলা সদরে প্রাথমিক পর্ব এবং ধারা বাহিক ভাবে গাজীপুরের সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমীতে চূড়ান্ত পর্বে এ প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়।
- উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা কোটা অনুযায়ী সদস্য ও সদস্যা বাছাই করে জেলা কমান্ড্যান্ট-এর কার্যালয়ে তালিকা প্রেরণ করেন।
- আনসার বাহিনী আইন ১৯৯৫ এবং আনসার বাহিনী প্রবিধান মালা ১৯৯৬ এর আলোকে সংশিষ্ট ব্যক্তিকে
- নিন্মরূপ যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হয়ঃ
- বয়স ১৮ হতে ৩০ বছর।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী পাশ। তবে এসএসসি বা তদূর্ধ ডিগ্রী ধারীগণকে প্রশিক্ষণ গ্রহণে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
- সর্বনিম্ন ১৬০সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৫’- ৪”(পুরুষের ক্ষেত্রে)
- সর্বনিম্ন ১৫০সেন্টিমিটার অর্থাৎ৫’- ০”(মহিলার ক্ষেত্রে)
- বুকের মাপ ৭৫ সেন্টিমিটার হইতে ৮০সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৩০”– ৩২”(পুরুষের ক্ষেত্রে)।
- দৃষ্টিশক্তিঃ ৬/৬
সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং চারিত্রিক ও নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট দাখিল করতে হয়।
- প্রশিক্ষণ কালীন প্রশিক্ষণার্থীদের বিনা মূল্যে থাকা, খাওয়া, পোষাক-পরিচ্ছদ প্রদান করা হয়।
- এ প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণের জন্য কোন সদস্যের নিকট হতে কোন অর্থ গ্রহণ করা হয় না।
- এ প্রশিক্ষণ সাফল্য জনক ভাবে সমাপ্তির পর দেশের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী কেপিআই/গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় অংগীভূত হয়ে নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন করে।
- প্রশিক্ষণ গ্রহণ কারী সদস্য/সদস্যাগণ দূর্গাপূজা, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অথবা সরকার নির্দেশিত যে কোন শৃংখলার দায়িত্ব পালনের জন্য স্বল্পকালীন সময়ের জন্য অংগীভূত হয়ে থাকেন।
(৩) পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ:
মৌলিক প্রশিক্ষণ ছাড়াও পেশা ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন আনসার ভিডিপি সদস্য/সদস্যা স্বনির্ভর হবার সুযোগ পায়। আনসার-ভিডিপি সংগঠন প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের পেশা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। যেমনঃ-
- কম্পিউটার বেসিক কোর্স (ভিডিপি সদস্য-সদস্যা)।
- ইলেকট্রিশিয়ান কোর্স (ভিডিপি সদস্য)।
- ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ ও মহিলা)।
- অটো মেকানিক্স প্রশিক্ষণ-ভিডিপি সদস্য।
- রেফ্রিজারেটর এন্ড এয়ার কন্ডিশনিং (উইথ ডাক সার্ভিসিং) প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- ইলেকিট্রিক্যাল হাউজ ওয়্যারিং প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- মোবাইল ফোন সার্ভিসিং প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- প্লাম্বিং এন্ড পাইপ ফিটিং প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- ওয়ের্ল্ডি 4জি প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- ম্যাশনারি এন্ড রড বাইন্ডিং প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- কনস্ট্রাকশন পেইন্টিং প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- টাইলস সেটিং প্রশিক্ষণ- ভিডিপি সদস্য।
- সেলাইও ফ্যাশন ডিজাইন প্রশিক্ষণ (আনসার সদস্যা/ভিডিপি সদস্যা)।
- গার্মেন্টস প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ ও মহিলা)
এছাড়াও আরো বিভিন্ন পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যা প্রতি বছর প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা মোতাবেক সংযোজন/বিয়োজন হয়ে থাকে।
(৪) সাধারন আনসার অঙ্গীভূতির নিয়মাবলী:
(৪-ক) আনসার সদস্যের জন্য:
যে কোন সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান/সংস্থায় চাহিদা বিবেচনা করে তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নিম্ন লিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে আনসার অংগীভূত করে দায়িত্বে নিয়োগ করা হয়।
- প্রশিক্ষণের পর আনসার-ভিডিপি একাডেমি হতে প্রশিক্ষণের পর আনসারদের স্মার্ট কার্ড ও সনদপত্র প্রদান করা হয় এবং অনলাইনে কেন্দ্রিয় প্যানেলে তাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
- সংস্থার চাহিদা মোতাবেক এসএমএস-এর মাধ্যমে আনসারদেরকে অংগীভূতির অফার প্রদান করা হয়।
- বর্তমানে তিন বছরের জন্য সংস্থায় আনসার অঙ্গীভূত করা হয় অর্থাৎ০১ জন আনসারের অঙ্গীভূতির মেয়াদ এক নাগাড়ে তিন বছর।
- অঙ্গীভূতিকাল সমাপ্তির পর পরই সংশ্লিষ্ট আনসার সদস্য অঙ্গীভূতির জন্য অটোমেটিক কেন্দ্রিয় প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়।
- আনসার সদস্যদের অঙ্গীভূতির জন্য ফায়ারিং অভিজ্ঞতাসহ মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হতে হয়।
- অঙ্গীভূত হওয়ার জন্য প্যানেল ভুক্তির নিমিত্তে নিম্নলিখিত যোগ্যতা প্রয়োজন:
- বয়সঃ ১৮ থেকে ৫০বছর।
- শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ৮ম শ্রেণী পাস, তদূর্ধদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
- উচ্চতাঃ ৫’- ৪”(পুরুষ) ৫’- ০” (মহিলা) (অধিক উচ্চতা সম্পন্ন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়)।
- বৈবাহিক অবস্থা বিবাহিত/অবিবাহিত উভয়ই।
- স্মার্ট কার্ড (যদি থাকে),
- ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক ও নাগরিকত্ব সনদ পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদের সত্যায়িত কপি,
- সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের সনদ,
- পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট,
- জেলা কমান্ড্যান্ট কর্তৃক প্রদত্ত অনাপত্তি পত্র (অন্য জেলার প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য),
- ০৬ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ইত্যাদি প্রয়োজনহয়।
যোগ্যতার ভিত্তিতে সংস্থায় আনসার অঙ্গীভূত করা হয় সুতরাং এ বিষয়ে আর্থিক লেনদেন দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
(৪-খ) সুযোগসুবিধাঃ
- সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে দৈনিক ভাতা ও বাৎসরিক ০২টি উৎসব ভাতা প্রাপ্তহন।
- প্রত্যেক অঙ্গীভূত আনসার সরকারী নির্ধারিত হারে মাসে ২৮কেজিগম, ২৮কেজি চাল এবং ০২লিটার ভোজ্য তেল ভতুর্কি মূল্যে প্রাপ্তহন।
- অঙ্গীভূত হয়ে দায়িত্ব পালন কালে দুর্ঘটনা জনিত কারণে আনসার সদস্যগণ বিভাগীয় কল্যাণ তহবিল হতে নিজ, স্ত্রী ও সন্তানদের চিকিৎসা ব্যয় বাবদ আর্থিক সহায়তা লাভ করেন।
- কন্যা বিবাহ, মেধাবী সন্তানদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য আনসার সদস্যগণ আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তহন।
- কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য বিশেষ সম্মাননা পদক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
- অঙ্গীভূত থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করলে উত্তরাধীকারীগণ নির্ধারিত হারে আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হন।